অনলাইন ডেস্ক | ২৯ জানুয়ারি ২০২১ | ১০:০০ পূর্বাহ্ণ | 151 বার
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাংবাদিকরা বিরাগভাজন হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবা সম্পর্কে অসত্য প্রতিবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোজাফ্ফর হোসেনের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
আনিসুল হক বলেছেন, জাতিসংঘের ইউএনডিপি পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী ভোটারদের সংগৃহীত ডেটার ৯৯ দশমিক ৭ শতাংশ সঠিক মর্মে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ওপর আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতার কারণে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে এ পর্যন্ত ১৪৪টি সংস্থা নাগরিকদের জাতীয় পরিচিতি নিশ্চিতকরণের জন্য চুক্তি করে এনআইডি সার্ভারের মাধ্যমে এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণ করেছে।
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। মোজাফ্ফর আহমেদ তার প্রশ্নে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র জনগণ যাতে পায় তার সুব্যবস্থা হবে কি না জানতে চান। এ সময় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করতে গিয়ে পিতার নামের স্থলে মায়ের নাম, প্রকৃত নামের স্থানে অন্য জনের নাম, নামের বানান ভুলের কথা তুলে ধরেন এবং এসব সংশোধনী নিয়ে হয়রানির অন্ত নেই বলে উল্লেখ করেন। তবে কীভাবে এসব তথ্য পেয়েছেন তার কোনো সূত্র উল্লেখ করেননি তিনি।
প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দক্ষ টেকনিক্যাল জনবল না থাকায় এবং সময় স্বল্পতার কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ভুল রয়ে যায়। এর অধিকাংশই বানানজনিত ভুল। বিভিন্ন পর্যায়ের ভুলগুলোর বিষয়ে আইন ও বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন সংশোধনের সুযোগ দিলেও অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারণে অনেকেই যথাসময়ে সেই সেবা গ্রহণ করেনি। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্রে লিপিবদ্ধ তথ্যাদির ক্ষেত্রে এখনো ভুল রয়ে গেছে। তবে, সংশোধনের জন্য প্রাপ্ত অবেদনসমূহে চাওয়া দাবি অনেকক্ষেত্রে অযৌক্তিক ও বাস্তবতা বিবর্জিত। ফলে ওইসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যথাযথ প্রমাণপত্র/দলিলাদি দাখিলসহ ক্ষেত্রবিশেষ তদন্ত/পুনঃতদন্তের প্রয়োজন পড়ে। এসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার উদ্ভব ঘটে এবং দীর্ঘসূত্রতা দেখা দেয়। এ কারণে বিশেষ করে সাংবাদিক মহল বিরাগভাজন হয় এবং এতদসংক্রান্ত সেবা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকার প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে, যা সম্পূর্ণ সত্য নয়।
এনআইডির সংশোধন/পরিবর্তনের আবেদন সাধারণভাবে ৩০ কার্যদিবসে নিষ্পত্তির কথা থাকলেও সঠিক দলিলাদি যুক্ত করে যৌক্তিক সংশোধনের আবেদন ৫-৬ দিবসেই নিষ্পন্ন হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, জন্মতারিখ সংশোধন/পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নাগরিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এনআইডিতে মুদ্রণ ভুল হলেও আবেদনকারীর চাওয়া তথ্য নিবন্ধন ফরম অনুযায়ী সঠিক থাকলে (যত বছরের পার্থক্য-ই হোক) এবং যাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষাগত সনদ আছে, তাদের ক্ষেত্রে ৫-৭ কার্যদিবসের মধ্যে সংশোধন হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু কিছু নাগিরক উদ্দেশ্যমূলকভাবে জন্মতারিখ পরিবর্তন করতে আবেদন করেন, যা একেবারেই অযৌক্তিক।
মন্ত্রী বলেন, একই ব্যক্তি নিবন্ধনকালে একটি জন্মতারিখ দেন, আবার সংশোধনের জন্য ভিন্ন জন্ম তারিখ উল্লেখিত জন্ম সনদ/উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়/কারিগরি/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সনদ জমা দিয়ে জন্ম তারিখের পরিবর্তন চান, যা সংশোধনের ড়্গেত্রে জটিলতার সৃষ্টি করে। ওই সনদে উল্লেখিত বয়সের সঙ্গে ব্যক্তির বাস্তবিক বয়সেরও মিল থাকে না। চাকরি বেতন ও ভাতাদি আদেশ ২০১৫ অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন নির্ধারণ/বেতন প্রাপ্তিতে এনআইডির তথ্যাদির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কতিপয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় পরিচয়পত্র আমলে না নিয়ে শুধু জন্ম সনদের ভিত্তিতে নিয়োগ দিচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন আবেদন ঘরে বসে অনলাইনে করার পাশাপাশি ঘরে বসেই প্রিন্ট দিয়ে পরিচয়পত্র গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে।
এম আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সর্বশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর বর্তমানে দেশে খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ১৫৮ জন। আগামী ২ মার্চ চ‚ড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২১
ajkervabna.com | ajker vabna
©- 2021 ajkervabna.com কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।